স্কুলছাত্রী তাসফিয়ার মৃত্যু নিয়ে বাড়ছে রহস্য, মামলা
স্কুলছাত্রী তাসফিয়ার মৃত্যু নিয়ে বাড়ছে রহস্য, মামলা .
চট্টগ্রামে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া (১৬) হত্যার ঘটনায় আদনানসহ ৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তাসফিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন পতেঙ্গা থানায় মামলা করেছে।
পতেঙ্গা থানার ওসি মো. আবুল কাশেম বিষয়টি আরটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন, তাসফিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন আজ দুপুর আড়াইটার দিকে আটক আদনান মির্জাকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৩।
তিনি আরও বলেন, মামলার অন্য আসামীদের গ্রেপ্তাররে অভিযান চলছে।’
আদনানের সঙ্গে প্রেমের এক মাসের মাথায় খুন হয়েছে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া। মঙ্গলবার (০১ মে) তারা দেখা করার জন্য নগরের গোলপাহাড় মোড়ের চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টে যায়। বুধবার (০২ মে) পতেঙ্গা সৈকতে তাসফিয়ার মরদেহ পায় পুলিশ।
তাসফিয়া নগরীর সানসাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা মো. আমিন উদ্দিন পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তারা নগরের ওআর নিজাম রোডের রোজ গার্ডেন নামের একটি বাসার পাঁচতলায় ভাড়া থাকতেন। আদনান মির্জা নগরের দক্ষিণ খুলশী এলাকায় থাকে। সেও সানসাইন গ্রামার স্কুলের শিক্ষার্থী।
তাসফিয়ার পরিবার দাবি করছে, তাকে খুন করেছে আদনান। তার সঙ্গে এক মাস আগে প্রেমের সম্পর্ক হয়েছিল তাসফিয়ার। পুলিশও প্রাথমিকভাবে এটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখছে।
তাসফিয়ার বাবার বন্ধু মো. রফিক বলেন, মঙ্গলবার (০১ মে) বিকেলে নামাজ পড়তে যান তাসফিয়ার বাবা। বাসায় তার মা ব্যস্ত ছিলেন ঘরের কাজে। এ সময় তাসফিয়া মোবাইলে ব্যস্ত ছিল। পরে সে কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘নামাজ পড়ে এসে তার বাবা বাসায় তাসফিয়াকে না দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাসাফিয়াকে না পেয়ে তার বন্ধুদের কাছ থেকে আদনানের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন। এরপর তাকে কল করেন।’
রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার রাজিব দে বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে তাসফিয়া ও আদনান এসেছিল। তারা চলে যাওয়ার পর রাত ৯টার দিকে এক ভদ্রলোক আসে আদনানকে নিয়ে। পরে জানতে পারি তিনি তাসফিয়ার বাবা।’
তাসফিয়ার এক আত্মীয় বলেন, ‘আদনানকে নিয়ে মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টে যায় তার বাবা আমিন উদ্দিন। সেখানে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ দেখেন তিনি। তখন আদনান জানায়, বিকেলে তাসফিয়াসহ তারা এ রেস্টুরেন্টে এসেছিল। পরে তাসফিয়াকে সে বিদায় দিয়ে সিএনজি অটোরিকশায় তুলে দেয়।’
কিন্তু ওইদিন রাতে তাসফিয়া বাসায় ফেরেনি। বুধবার (২ মে) সকালে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের ১৮ নম্বর ঘাটে পাথরের ওপর থেকে উদ্ধার হয় তাসফিয়ার.
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের ১৮ নম্বর ব্রিজঘাটের পাথরের ওপর থেকে সানসাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়া আমিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিনই সন্ধ্যায় নগরের খুলশী থানার জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটি এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জাকে (১৬) আটক করে পুলিশ।
আটক আদনান মির্জা ব্যবসায়ী ইস্কান্দার মির্জার ছেলে।
এর আগে গতকাল বুধবার পুলিশের এসি মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জা। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে বাসায় কাউকে না জানিয়ে তাসফিয়া বাসা থেকে বেরিয়ে চায়না গ্রিল নামে একটা রেস্টুরেন্টে বন্ধু আদনানের সঙ্গে দেখা করে। পরে বাসা থেকে ফোন পাস তাসফিয়া। তাকে সিএনজি অটোরিকশায় তুলে দেন আদনান। কিন্তু বাবা-মার ভয়ে তাসফিয়া বাসায় ফেরেনি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তাসফিয়া রাত নয়টার পরও বাসায় না ফেরায়, তার বাবা-মা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। পরে আবারও আদনানকে ফোন করে তাসফিয়ার খবর জানতে চান। তাসফিয়াকে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়ার কথা জানায় আদনান।
No comments